সউদী আরব:
এমন একটি দেশ আর কোথাও আছে কি?
লেখক: শাইখ শাইখ আব্দুর রকীব মাদানী
ও শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
সউদী আরব বর্তমান বিশ্বে একমাত্র ইসলামী রাষ্ট্র যেখানে সর্বোচ্চ পরিমানে ইসলামের বিধিবিধান বাস্তবায়িত হয়। কিন্তু দেশটি নানা অপপ্রচারে শিকার হওয়ার কারণে অনেক মানুষ এ দেশে ইসলাম চর্চার অনেক কিছুই অবগত নয় বা অনেক ক্ষেত্রে ভুল ধারণা পোষণ করে থাকে। তাই সউদী আরবে ইসলামের বাস্তব অবস্থাটা তুলে ধরার এই সামান্য প্রয়াস। লেখাটি শাইখ আব্দুর রকীব মাদানী ও শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী যৌথভাবে ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। সেখান থেকেই লেখাটি ওয়েব সাইটে শেয়ার করা হল।
শাইখ শাইখ আব্দুর রকীব মাদানী লিখেছেন:
০১) যে দেশে শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রেরিত হোন এবং যেখান থেকে সারা বিশ্বে ইসলাম প্রচার লাভ করে।
০২) যে দেশে এই যুগেও কোন মন্দির নেই, কোন গির্জাঘর নেই এবং কোন অমুসলিমের নাগরিকতা নেই।
০৩) যে দেশে একটি দরগাহ নেই-যেখানে ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পাঠকারীরা জঘন্য শির্কে লিপ্ত হয়।
০৪) নামাযের জন্য আযান হওয়ার সাথে সাথে যেখানে দোকান-পাট বন্ধ করা হয় আর আলেম বাহিনী আওয়াজ দেন, সলাহ..সলাহ.. চল, সবাই মসজিদে চল।
০৫) যে দেশে একসাথে আযান হয় একই সময়ে সেখানকার সকল মসজিদে নামায হয়।
০৬) যে দেশে কোন মদের দোকান বা মদ তৈরির কারখানা নেই।
০৭) যে দেশে একটি সিনেমা হলও নেই।
০৯) যেখানে বাধ্যতামূলক মাধ্যমিক পর্যন্ত স্কুলে ইসলোমী শিক্ষা গ্রহণ করা সকলের জন্য বাধ্যতামূলক।
১০) যেখানে প্রাইমারী (ক্লাস ওয়ান) থেকে মেয়েদের স্কুল আলাদা আর ছেলেদের আলাদা।
১১) যেখানে পর্দা ব্যতিরেকে কোন মহিলার বাড়ির বাইরে আসা নিষেধ।
১২) যেখানে বছরের এক দিনও হরতাল বা রাস্তা অবরোধের ঘটনা ঘটে না।
১৩) বিশ্বের একাধিক দেশের লোক যেখানে কাজ করতে এসে সস্তির নি:শ্বাস ফেলে আর নিজ দেশের সম্পর্কে মন্তব্য করে বলে: দেশের অবস্থা খারাপ। দেশে থাকার মত অবস্থা নেই।
১৪) যে দেশে মুসলিম ভাইয়েরা রাজনৈতিক দলের নামে বিভক্ত হয়ে যেখানে মারামারি-খুনাখুনিতে লিপ্ত হয় না।
১৫) যে দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বিশ্বে সব চেয়ে বেশি বিনামূল্যে কুরআন এবং কুরআনের অনুবাদ বিতরণ করেন।
১৬) পাশ্চাত্য দেশগুলির বহু চাপের পরেও যে দেশে এখনো হদূদ বা ইসলামী আইন-কেসাস প্রকাশ্যে বাস্তবায়ন করা হয়। (যার কারণে জরিপ অনুযায়ী সউদী আরবে অন্যান্য দেশের তুলনায় রক্তপাত ও হত্যাকাণ্ডের পরিমান সবচেয়ে নিম্নে)
১৭) যে দেশে অমুসলিমদের দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার জন্য চালু আছে কয়েক শ ইসলামিক সেন্টার। যেগেুলোর মাধ্যমে বছরে ২০ হাজারেরও বেশি সংখ্যায় অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করে আল হামদুলিল্লাহ।
১৮) যে দেশ বিশ্বের ১৬০টিরও অধিক দেশের ছাত্রকে সম্পূর্ণ স্কলারশিপ দিয়ে মদীনা ইউনিভার্সিটিতে ইসলাম সম্পর্কে পড়ার সুযোগ দেয়।
১৯) যে দেশের অর্থায়নে প্রায় পৃথিবীর সকল দেশে দাঈ বা ইসলাম প্রচারকগণ দ্বীনের দাওয়াতের কাজ করে। (আর প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ইসলামী বই-পুস্তক, লিফলেট, সিডি ইত্যাদি দাওয়াহ উপকরণ বিভিন্ন ভাষায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়)
২০) বর্তমান সময়ে যে দেশের সরকার এবং জনগণের মাধ্যমে পৃথিবীতে সব চেয়ে বেশী মসজিদ নির্মাণ হয়েছে।
আর বললাম না। নচেৎ আরো এ রকম অনেক বৈশিষ্ট আছে। তবে কিছু মন্দ যে নেই তা নয়। তবে ভালোর তুলনায় তার সংখ্যা তেমন নয়। এসব ভাল গুণ বর্ণনা করলে অনেকই কত কিছু যে মন্তব্য করে তা আপনারা অবশ্যই জানেন। আমি তাদের তোয়াক্কা না করেই পোস্টটা লিখলাম। দেখুন কত জনে কত কি বলে? আসলে আমরা কথায় পটু!
শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল আরও কয়েকটি পয়েন্ট সংযুক্ত করেছেন সেগুলো হল:
২১) যে দেশে কুরআন-হাদীসকে জাতীয় সংবিধান হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। যার কারণে সেখানে আলাদা কোনও সংবিধান নাই।
২৩) যে দেশে যাকাত আদায় না করলে কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রিনিউ হয় না।
২৪) যে দেশে জাদু-টোনা করা ফৗেজদারী আইনে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য অপরাধ। জাদু-টোনার বই ছাপানো এবং ক্রয়-বিক্রয় করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
২৫) যে দেশে কুরআন মুখস্ত করলে জেলের সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজা কমিয়ে দেয়া হয়।
২৬) যে দেশের আকাশে কালিম খচিত পতাকা পতপত করে উড়ে এবং কালিমার সম্মানে তা কোন উপলক্ষেই এক মিনিটের জন্যও অর্ধনমিত রাখা হয় না।
২৭) যে দেশে সকল মসজিদ ১০০% সরকারী খরচে চলে। ইমামদের বেতন-ভাতা, কারেন্ট বিল, এসি, কার্পেট, মিনারেল ওয়াটার, টিস্যু ইত্যাদি আধুনিক সব কিছুর চমৎকার ব্যবস্থাপনা সরকারই করে থাকে। (তবে এ ক্ষেত্রে দানশীলদের অংশ গ্রহণের সুযোগ আছে)।
২৮) যে দেশে আলেম ছাড়া বিচারক হওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ এখানে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালিত হয়।
২৯) যে দেশে প্রাইমারি থেকে ডক্টরেট পর্যন্ত সকল ক্লাসেই কুরআন মুখস্ত করা বধ্যতা মূলক।
৩০) মক্কা-মদীনায় হাজিদের সেবার জন্য এ দেশের অবদান পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।
সত্যিকারভাবে ইসলামের বাস্তবায়ন ও শান্তি-স্থীতিশীলতার দিক দিয়ে তুলনা করলে আমরা বলতে পারি:
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের সেরা সে যে নবীর জন্মভূমি।
প্রিয় পাঠক, হিংসুক, কবরপূজারী ও বিদআতীদের অনর্থক সমালোচনাকে পরোয়া না করে সত্যকে ছড়িয়ে দিন।