
বর্তমানে সুদ আমাদের দেশ ও জাতিকে অক্টোপাসের মত বেঁধে ফেলেছে। সুদ ছাড়া আমাদের অর্থনীতির চাকা যেন বন্ধ। যার কারণে পত্রিকা ও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে মানুষকে এ বিষয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। নির্দিষ্ট অংকের লাভের বিনিময়ে অর্থ ডিপোজিট করতে আহবান করা হচ্ছে। বিভ্রান্ত ও সৎ পথ থেকে বিচ্যুত কিছু আলেমের ফতোয়াও প্রচার করা হচ্ছে এই মর্মে যে, সুদী ব্যাংকের সাথে লেন্তদেন করা জায়েয এবং নির্দিষ্ট অংকে ইন্টারেস্ট বা সুদ গ্রহণ করাও জায়েয।
কিন্তু এ বিষয়টি অত্যন্ত ভয়ানক। প্রকাশ্যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরোধিতা ও তাঁদের প্রকাশ্য নাফরমানী। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:
فَلْيَحْذَرْ الَّذِينَ يُخَالِفُونَ عَنْ أَمْرِهِ أَنْ تُصِيبَهُمْ فِتْنَةٌ أَوْ يُصِيبَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ
“যারা তাঁর নির্দেশের বিরোধিতা করে তারা যেন সতর্ক হয়ে যায় যে, তারা ফেতনায় পতিত হবে অথবা তারা যন্ত্রনাদায়ক শাস্তির সম্মুখিন হবে। (সূরা নূর- ৩৬)
ইসলাম ধর্মে একথা সর্বজন বিদিত যে, কুরআন সুন্নাহ্র দলীল অনুযায়ী সুদী ব্যাংকে অর্থ রেখে সেখান থেকে নির্দিষ্টহারে ফায়েদা বা ইন্টারেষ্ট গ্রহণ করা নিঃসন্দেহে সুদ। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সুদকে হারাম করেছেন। সুদ কাবীরা গুনাহের অন্তর্ভূক্ত। সুদ অর্থ-সম্পদের বরকতকে মিটিয়ে দেয়, আল্লাহর ক্রোধ বাড়িয়ে দেয়। সুদের কারণে আমল কবূল হয় না।
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ছহীহ্ সূত্রে প্রমাণিত হয়েছে তিনি বলেন, “নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহ্ পবিত্র তিনি পবিত্রতা ব্যতীত অন্য কিছু গ্রহণ করেন না। আল্লাহ্ তা‘আলা রাসূলদের (আঃ) প্রতি যা নির্দেশ পাঠিয়েছেন, মুমিনদের প্রতিও তাই পাঠিয়েছেন। তিনি এরশাদ করেন: ( ياَ أيُّهاَ الرُّسُلُ كُلُوْا مِنْ الطَّيِّباَتِ واعْمَلُوْا صاَلِحاً ) “হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার্য গ্রহণ কর এবং সৎ কর্ম কর।“ (সুরা মু‘মেনূন: ৫১)
তিনি মুমিনদেরকে লক্ষ্য করে নির্দেশ দেন: (ياَ أيُّهاَ الَّذِيْنَ آمَنُوْا كُلُوْا مِنْ طَيِّباَتِ ماَ رَزَقْناَكُمْ) “হে ঈমানদারগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু সামগ্রী থেকে আহার্য গ্রহণ কর, যেগুলো আমি তোমাদেরকে রুযী হিসেবে দান করেছি।
অতঃপর রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন, যে দীর্ঘ সফর করে এলায়িত কেশ ও ধুলায়মান পোশাক নিয়ে অত্যন্ত ব্যাকুলভাবে আকাশের দিকে দুহাত তুলে ডাকতে থাকে, হে আমার প্রতিপালক! হে রব!! অথচ সে ব্যক্তির পানাহার সামগ্রী হারাম উপার্জনের, পোশাক-পরিচ্ছেদ হারাম পয়সায় সংগৃহীত, এমতাবস্থায় কি করে তার দুআ কবূল হতে পারে? (সহীহ্ মুসলিম)
অতএব হারাম খেলে দুআ কবূল হবে না, ইবাদত কবূল হবেনা। কামাই-রোজগারে বরকত হবে না। হারাম অর্থে পরিবার-সন্তানদের লালন পালন করলে তারাও সৎভাবে গড়ে উঠবে না। উপরোন্ত ক্বিয়ামতের কঠিন মাঠে জবাবদিহি তো করতে হবেই।
প্রত্যেক মুসলমানের জানা উচিত যে, ক্বিয়ামতের মাঠে আল্লাহ তা’আলা তাকে তার সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। কিভাবে সম্পদ উপার্জন করেছে? আর কোথায় তা খরচ করেছে? নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, “ক্বিয়ামতের দিন কোন মানুষের পা টলবে না যতক্ষণ সে চারটি প্রশ্নের উত্তর না দিবে। প্রশ্ন করা হবে, তার যৌবনকাল সম্পর্কে কোন কাজের মাঝে এ বয়স অতিবাহিত করেছে? তার জীবন সম্পর্কে কিভাবে তার আয়ু শেষ করেছে? তার সম্পদ সম্পর্কে কিভাবে তা উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে? এবং তার জ্ঞান সম্পর্কে কি আমল করেছে সেই জ্ঞান দ্বারা? (তিরমিযী)
জেনে রাখুন! সুদ একটি অন্যতম কাবীরা গুনাহ। কুরআন ও হাদীছে কঠিনভাবে সুদকে হারাম করা হয়েছে। সুদের যাবতীয় প্রকার-প্রকৃতি ও যে নামেই ব্যবহার করা হোক তা নিষিদ্ধ। আল্লাহ্ বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পার। এবং তোমরা সেই আগুন থেকে বেঁচে থাক, যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রাসূলের, যাতে তোমাদেরকে দয়া করা হয়। (সূরা আল ইমরান্ত ১৩০-১৩২)
আল্লাহ আরো বলেন, وَمَا آتَيْتُمْ مِنْ رِبًا لِيَرْبُوَا فِي أَمْوَالِ النَّاسِ فَلَا يَرْبُوا عِنْدَ اللَّهِ “মানুষের সম্পদ বৃদ্ধি পাবে বলে তোমরা সুদ হিসেবে যা প্রদান করে থাক আল্লাহর কাছে তা ধন্তসম্পদ বৃদ্ধি করে না। (সূরা রূম- ৩৯)
আল্লাহ বলেন, যারা সুদ খায়, ক্বিয়ামতে দন্ডায়মান হবে এমন লোকের মত, যার উপর শয়তান আছর করে তাকে মোহাবিষ্ট করে দিয়েছে। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয়ও তো সুদ নেয়ার মতই। অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। (সূরা বাক্বারা ২৭৫-২৭৬)
আল্লাহ আরো বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর, যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। فَإِنْ لَمْ تَفْعَلُوا فَأْذَنُوا بِحَرْبٍ مِنْ اللَّهِ وَرَسُولِهِ অতঃপর তোমরা যদি সুদ না ছাড়, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত হয়ে যাও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে নিজেদের মূলধন ফেরত পেয়ে যাবে। তোমরা কারো উপর অত্যাচার করো না এবং কেউ তোমাদের প্রতি অত্যাচার করবে না। (সূরা বাক্বারা- ২৭৮-২৭৯)
আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার চাইতে বড় অপরাধ আর কি হতে পারে? (আল্লাহ আমাদের রক্ষা কর।)
নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা ধ্বংসকারী সাতটি কাজ থেকে দূরে থাক। তারা বললেন, উহা কি কি হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শির্ক, যাদু, কোন অধিকার ছাড়া কাউকে খুন করা, সুদ খাওয়া, ইয়াতীমের সম্পদ ভক্ষণ করা, যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা, বিদুষী সতী-সাধী মুমিন নারীদেরকে অপবাদ প্রদান করা। (বুখারী ও মুসলিম)
ছহীহ মুসলিমে জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ آكِلَ الرِّبَا وَمُؤْكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অভিশাপ করেছেন সুদখোরকে, সুদ দাতাকে, সুদের লিখককে এবং তার দুই সাক্ষিকে। তিনি বলেন, পাপের ক্ষেত্রে সকলেই এক সমান।
নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, সুদের মধ্যে সত্তরটির মত পাপ রয়েছে। তম্মধ্যে সবচেয়ে সহজ পাপটি হচ্ছে নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার করা। (ইবনু মাজাহ্ হা/২২৭৪)
রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন, دِرْهَمٌ رِبًا يَأْكُلُهُ الرَّجُلُ وَهُوَ يَعْلَمُ أَشَدُّ مِنْ سِتَّةٍ وَثَلَاثِينَ زَنْيَةً জেনে-শুনে এক দিরহাম পরিমাণ সুদ খাওয়া আল্লাহর নিকট ৩৬ জন নারীর সাথে ব্যভিচারের চাইতে অধিক গুনাহের কাজ। (আহমাদ, সিলসিলা ছহীহা হা/ ১০৩৩)
জাহান্নামের মধ্যে সুদখোরের শাস্তি সম্পর্কে একটি দীর্ঘ হাদীছে বলা হয়েছে। নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বপ্নে দু’জন ফেরেশতার সাথে জান্নাত-জাহান্নাম দেখেছেন, জাহান্নামে বিভিন্ন অপরাধীদের শাস্তির ধরণ অবলোকন করেছেন। তিনি দেখেছেন, জনৈক ব্যক্তি একটি রক্তের নদীতে সাঁতার কাটছে। নদীর তীরে পাথর হাতে দাঁড়িয়ে আছে আরেকজন ব্যক্তি। লোকটি সাঁতার কাটতে কাটতে যখনই কিনারে আসছে তখন তীরে দন্ডায়মান লোকটি পাথরটি তার মুখে নিক্ষেপ করছে, তখন সে পূর্বের স্থানে নদীর মধ্যে চলে যাচ্ছে। এভাবে যখনই সে নদী থেকে বের হতে চাচ্ছে, তাকে পাথর মেরে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। এভাবে তার শাস্তি চলছেই। নদীর মধ্যের লোকটি হচ্ছে সুদখোর। (বুখারী ও মুসলিম)
এ হচ্ছে কুরআন সুন্নাহ হতে কতিপয় দলীল, যা দ্বারা বুঝা যায় সুদ কত ভয়ানক অপরাধের কাজ। ব্যক্তি ও জাতির জন্য কত মারাত্মক ও ভয়ানক বিষয়। সুদের সাথে লিপ্ত ব্যক্তি বড় ধরণের কাবীরা গুনাহে লিপ্ত এবং এর মাধ্যমে সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
হে মুসলিম ভাই! আপনি যদি পরকালকে বিশ্বাস করেন, তবে আপনার সম্পদে আল্লাহকে ভয় করুন। আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনার জন্য যা বৈধ করেছেন তা যথেষ্ট মনে করুন। কেননা হারাম বস্তু পরিত্যাগ করে আল্লাহর বৈধকৃত ববস্থা গ্রহণ করাই যথেষ্ট।
প্রকৃত পক্ষে যে মুসলমান নিজের কল্যাণ চায়, জাহান্নাম থেকে বাঁচতে চায় এবং আল্লাহর রেযামন্দী ও করুণা লাভে নিজেকে ধন্য করতে চায় সে অবশ্যই সুদী ব্যাংক থেকে বিরত থাকবে। সুদী ব্যাংকে সুদ নেয়ার ভিত্তিতে অর্থ জমা রাখবে না।
বর্তমানে প্রচলিত সুদের কয়েকটি উদাহরণঃ
* বেতন বিক্রি করাঃ একজন লোক মাস শেষে তিন হাজার টাকা বেতন পাবে। সে অগ্রীম এই বেতন বিক্রয় করে দেয় পঁচিশ শত বা টাকা সুদ হবে।
* বাকী বিক্রয় করে মূল্যের উপর সুদ গ্রহণঃ কোন বস্তু নির্দিষ্ট মূল্যে বাকী বিক্রয় করে সময় মত উহা পরিশোধ করতে না পারলে সেখানে অতিরিক্ত টাকা সংজোগ করা হলে তা সুদের অন্তর্গত হবে।
যেমন বর্তমানে মধ্য প্রচ্যে বিশেষকরে সৌদী আরবে কাজ করতে আসা অনেক মানুষ একশত রিয়াল দাম নির্ধারণ করে এক মাসের মেয়াদে মোবাইল কার্ড বিক্রয় করে। মাস শেষ হলে একশত রিয়াল দিতে না পারলে পরবর্তী মাসের জন্য সেখানে আরো পাঁচ বা দশ রিয়াল বৃদ্ধি করা হয়। এই বৃদ্ধি চক্রহারে বৃদ্ধি সুদের অন্তর্গত। আবার অনেকে পাঁচানব্বই রিয়ালের/টাকার কার্ড একশত রিয়াল/টাকা দাম নির্ধারণ করে বিক্রয় করে এক মাসের মেয়াদে। মাস শেষ হলে গ্রহীতার নিকট থেকে পূর্ণ একশত রিয়াল না নিয়ে কার্ডের দাম ৯৫ রিঃ/টাকা অবশিষ্ট রেখে শুধুমাত্র লাভের পাঁচ রিয়াল/টাকা নিয়ে নেয়। এই পাঁচ রিয়াল/টাকা গ্রহণ করা সুদ। কেননা এখানে রিয়াল/টাকা দিয়ে অতিরিক্ত রিয়াল/টাকা নেয়ার মাধ্যমে সুদ গ্রহণ করাই মূল উদ্দেশ্যে মধ্যখানে কার্ড একটি বাহানা মাত্র।
* দুমন নীচু মানের ধান, গম ইত্যাদির বিনিময়ে একমন উন্নত মানের বস্তু নেয়াও সুদ।
* টাকা-পয়সা কর্য দিয়ে যে কোনভাবে কর্যগ্রহীতার নিকট থেকে উপকার গ্রহণ করা সুদের অন্তর্গত। যেমন তার নিকট থেকে হাদিয়া-উপহার গ্রহণ করা, তার নিকট পানাহার করা ইত্যাদি। তবে যদি আগে থেকেই তাদের মাঝে এসব বিষয় প্রচলিত থাকে তবে কোন অসুবিধা নেই। তা সুদের অন্তর্গত হবে না। রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেহ যদি কোন মানুষকে কর্য প্রদান করে, আর কর্যগ্রহীতা তাকে কিছু হাদিয়া-উপহার দেয় অথবা তার বাহনে উঠায়, তবে তার বাহনে উঠবে না, তার হাদিয়া গ্রহণ করবে না। অবশ্য আগে থেকে যদি তাদের মাঝে এসব আদান্তপ্রদানের অভ্যাস থেকে থাকে তবে কোন অসুবিধা নেই। (ইবনু মাজাহ্) অতএব টাকা দিয়ে তার বিনিময়ে অতিরিক্ত টাকা নেয়া যে সুদ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বর্তমানের অধিকাংশ ব্যাংক নির্দিষ্ট হারে মানুষকে ইন্টারেষ্ট (সুদ) দিয়ে থাকে। এজন্য সে সকল ব্যাংকে টাকা জমা রাখা উচিত নয়। কেননা এতে তাদেরকে হারাম কাজে সহযোগিতা করা হয়। আর আল্লাহ বলেন, وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلا تَعَاوَنُوا عَلَى الإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ তোমরা পরস্পরকে সৎ ও আল্লাহ ভীতির কাজে সহযোগিতা কর এবং গুনাহ ও শত্রুতার কাজে পরস্পরকে সহযোগিতা করো না। (সূরা মায়েদা- ২)
বৈধ লাভ গ্রহণঃ লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে ব্যবসায় টাকা লাগানো বৈধ ব্যবাসার অন্তর্গত। অর্থাৎ- লাভ হলে লাভের অংশ পাবে লোকসান হলে লোকসান মেনে নিতে হবে এই চুক্তির শর্তে ব্যবসা করলেই তা হালাল হিসেবে গণ্য হবে অন্যথায় নয়। এই ভিত্তিতে কোন ব্যাংক যদি লাভ-লোকসানের শর্ত রেখে আপনাকে মুনাফা নেয়, তবে তা জায়েয হবে।
সবশেষে মুসলিম ভাইদের প্রতি আবেদন, দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী সম্পদ অবৈধ উপায়ে সঞ্চয় না করে অন্তরে আল্লাহর ভয় রেখে সৎভাবে উপার্জনের চেষ্টা করা উচিত। কেননা নবী (সাল্লালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন, কোন প্রাণী নির্ধারিত জীবিকা গ্রহণ করা ব্যতীত কখনই মৃত্যু বরণ করবে না। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। জীবিকা অনুসন্ধানে সুন্দর পন্থা অবলম্বন কর। জীবিকা উপার্জনের বিলম্ব তোমাদেরকে যেন পাপাচারে লিপ্ত হয়ে উহা অনুসন্ধানে উদ্বুদ্ধ না করে। কেননা আল্লাহর আনুগত্য ব্যতীত তাঁর ভান্ডার থেকে কিছুই পাওয়া যাবে না। (আবু নুআইম হিলইয়াতুল আউলিয়া গ্রনে’ হাদীছটি বর্ণনা করেন পৃঃ ২৭। শায়খ আলবানী হাদীছটি ছহীহ বলেন, দ্রঃ ছহীহুল জামে হা/ ২৮৫। মিশকাত হা/ ৫৩০০। ফিক্বহুস্ সিরাহ্ হা/ ৯৬।)
হে আল্লাহ আমাদেরকে সৎ উপায়ে অর্থ উপার্জন করার তাওফীক দান কর। সৎ উপায় সমূহ আমাদের জন্য সহজ করে দাও। উপার্জিত সম্পদে বরকত দাও। আর যাবতীয় হারাম পন্থায় উপার্জন করা থেকে রাঁচিয়ে রাখ। আমাদের ইবাদত ও দুআ কবূল কর। আমীন॥
সংকলন ও অনুবাদঃ
মুহাঃ আবদুল্লাহ্ আল্ কাফী
দাঈ, জুবাইল দা’ওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সঊদী আরব।
পোঃ বক্স নং ১৫৮০, জুবাইল- ৩১৯৫১
ফোনঃ ০০৯৬৬-০৩-৩৬২৫৫০০ এক্স, ১০১১ ফ্যাক্স:০০৯৬৬-০৩- ৩৬২৬৬০০
Email: [email protected]
خطر الربا
إعداد: محمد عبد الله الكافي
الداعية بالمكتب التعاوني للدعوة والإرشاد وتوعية الجاليات بالجبيل
bn.islaam
13 May 2011— আমীন
আব্দুল্লাহিল হাদী
14 May 2011আল্লাহ তুমি কবুল কর। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Abbass
30 May 2011mashaAllah.. very nice article.
JazakAllahu khair.
আব্দুল্লাহিল হাদী
31 May 2011Thank you for your good Comment. jazakallahu khairan.
আহসানুল হক(Ahsanul Hoque)
8 Jul 2011আস্-সালামু ‘আলাইকুম , খু সুন্দর প্রবন্ধ । কিন্তু আমি আরো জানতে চাই যে শেয়ার মার্কেট বা STOCK MARKET ব্যবসা করা বৈধ হবে কিনা ? আর ব্যাঙ্কে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বিনা সুদে টাকা রাখা যাবে কিনা ? বিষয়গুলি জানালে কৃতঙ্গ থাকবো ।
nuruzzaman
18 Nov 2011সুদ সম্পর্কে এ জন্য সেই আলেমরা দায়ী। বাস্তবে আলেমগণ ইসলামি বাংকের সাথে
সরাসরি জড়িত থাকেন না।
আব্দুল্লাহিল হাদী
21 Nov 2011যে যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সেই বিষয়ে কাজ করা উচিৎ। সব আলেমকেই সব কাজ করতে হবে এমন জরুরী নয়। একদল আলেম যারা শরীয়তের বিধি বিধান সসম্পর্কে ভাল জ্ঞান রাখেন তারা মানুষকে শরীয়তের সঠিক শিক্ষা দিবেন…যারা বক্তব্যে ভাল তারা বক্তব্যের সাহায্যে মানুষকে দ্বীনের পথে আহবান করবেন…আর যার ইসলামী ব্যাংকিং ও অর্থনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তারা ক্ষেত্রে অবদান রাখবেন। আল হামদুলিল্লাহ বর্তমানে অধিকাংশ ইসলামী বাংকের শরীয়া কাউন্সিল সমূহ যোগ্যতা সম্পন্ন আলেমগণ দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
আর সাধারণ মুসলমানদের কর্তব্য তারা কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী তাদের জীবনের সব কাজ করার চেষ্টা করা এবং বিশেষজ্ঞ আলেমদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা। ধন্যবাদ আপনার মতামতের জন্য।
Azmi
26 Dec 2012@ আহসানুল হক
Share market kon porjaye halal??>>>
dekhun: islamqa saudi ulamader official site
http://islamqa.info/en/ref/8590
http://islamqa.info/en/ref/124311
Humayun
24 Aug 2013আসসালামু আলাইকুম,
ভাই,
এখানে একদম শুরুর দিকে “হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস’ থেকে আহার্য গ্রহণ কর এবং সৎ কর্ম কর।“ (সুরা মু‘মেনূন: ৫১) – এখানে হয়ত টাইপিং এ ভুল আছে, ভুল থাকলে কষ্ট করে তা সঠিক করে দিন।
আসসালামু আলাইকুম।
আব্দুল্লাহিল হাদী
25 Aug 2013জাযাকাল্লাহু খাইরান। ঠিক করে দিয়েছি।
Humayun
24 Aug 2013আসসালামু আলাইকুম,
ভাই,
এ হাদীসে টাইপিং এর কারণে ভুল রয়েছে হয়ত। এখানে ‘অয়ু’ হয়েছে যা আসলে ‘আয়ু’ হতে পারে। নিচে ভুল টাইপিং সম্বলিত হাদীসটি কপি পেষ্ট করা হল:
“ক্বিয়ামতের দিন কোন মানুষের পা টলবে না যতক্ষণ সে চারটি প্রশ্নের উত্তর না দিবে। প্রশ্ন করা হবে, তার যৌবনকাল সম্পর্কে কোন কাজের মাঝে এ বয়স অতিবাহিত করেছে? তার জীবন সম্পর্কে কিভাবে তার অয়ু শেষ করেছে? তার সম্পদ সম্পর্কে কিভাবে তা উপার্জন করেছে এবং কোথায় ব্যয় করেছে? এবং তার জ্ঞান সম্পর্কে কি আমল করেছে সেই জ্ঞান দ্বারা? (তিরমিযী)
আসসালামু আলাইকুম।
আব্দুল্লাহিল হাদী
25 Aug 2013জাযাকাল্লাহু খাইরান। টাইপিং মিসটেকটি সংশোধন করা হয়েছে। ধন্যবাদ।